ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর একটি। চিকিৎসা, শপিং, ঘুরতে যাওয়া বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বিভিন্ন কারণে প্রতিবছর লাখো বাংলাদেশি ভারতে যান। তবে ভ্রমণের আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা। অনেকেই জানতে চান, “ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে?” এই লেখায় আমরা সহজভাবে ভিসার কাগজপত্র, আবেদন প্রক্রিয়া, খরচ এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস তুলে ধরবো।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে

ভারতের টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট প্রয়োজন। সঠিক ডকুমেন্ট না থাকলে ভিসা প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিতে পারে।

  • বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট – কমপক্ষে ৬ মাস বৈধ হতে হবে এবং পর্যাপ্ত খালি পৃষ্ঠা থাকা উচিত। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সব তথ্য সঠিক। খালি পৃষ্ঠা না থাকলে ভিসা স্টিক করা সম্ভব হবে না।
  • সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি – সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সাম্প্রতিক ছবি লাগবে। ছবির মান ভালো হতে হবে, মুখ স্পষ্ট দেখা যাবে এমন হতে হবে। অপ্রচলিত বা অস্পষ্ট ছবি ভিসা আবেদন বাতিল করতে পারে।
  • পূর্ণাঙ্গ অনলাইন আবেদন ফর্ম – ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং প্রিন্ট আউট রাখুন। ভুল তথ্য দিলে ভিসা অনুমোদনে বিলম্ব হতে পারে। আবেদন ফর্মে সমস্ত তথ্য স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে দেওয়া উচিত।
  • NID বা জন্মসনদ কপি – পরিচয় যাচাইয়ের জন্য জমা দিতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে আবেদনকারী আসলেই বাংলাদেশের নাগরিক। ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা জন্মসনদ কপি ছাড়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে পারে না।
  • পুরনো ভিসা থাকলে পাসপোর্ট/পেজের ফটোকপি – পূর্বের ভিসা থাকলে জমা দিতে হবে। এটি ভ্রমণ ইতিহাস যাচাই করতে সাহায্য করে এবং ভিসা অফিসে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (৩-৬ মাসের) – ভ্রমণ খরচ বহনের ক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজন। স্টেটমেন্টে পর্যাপ্ত ব্যালান্স থাকা উচিত এবং হঠাৎ বড় লেনদেন এড়ানো ভালো। এটি দেখায় যে আপনি আপনার ভ্রমণকালের খরচ নির্বিঘ্নে বহন করতে সক্ষম।
  ইউরোপের কোন কোন দেশের ভিসা চালু আছে ২০২৫

ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন ফর্ম

ইন্ডিয়ান ভিসার আবেদন ফর্ম এখন পুরোপুরি অনলাইনে পূরণ করতে হয়। ভারত সরকারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। সেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ভ্রমণের উদ্দেশ্য, পাসপোর্ট তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে।

ফর্ম পূরণের সময় একটি Application ID পাওয়া যাবে। এই আইডি দিয়ে পরে ফর্ম পুনরায় লগইন করে এডিট করা সম্ভব। ফর্ম পূরণের পর তা প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জমা দিতে হবে।

ইন্ডিয়ান ভিসার ছবির নিয়মাবলী

ভিসার জন্য ছবি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ছবি ভুল বা অপ্রচলিত হলে অনেক সময় আবেদন বাতিল হয়ে যায়। তাই ছবি সংক্রান্ত সকল নিয়ম মেনে চলা আবশ্যক। ভারতীয় টুরিস্ট ভিসার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে:

  • ছবির সাইজ: 2×2 ইঞ্চি – ছবি ছোট বা বড় হলে ভিসা আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। সঠিক সাইজ নিশ্চিত করা দরকার যাতে মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। প্রিন্ট বা স্ক্যান করার সময় সাইজ পরিবর্তিত হয় না তা যাচাই করা জরুরি।
  • ব্যাকগ্রাউন্ড: সাদা রঙের – ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হওয়া আবশ্যক, যাতে মুখের বৈশিষ্ট্য পরিষ্কার দেখা যায়। রঙিন বা আঁকাবাঁকা ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি বাতিল করতে পারে।
  • মুখ সম্পূর্ণ স্পষ্ট হতে হবে: চশমা বা টুপি ছাড়া – ছবি তোলার সময় মুখ এবং চোখ পুরোপুরি দেখা যায় এমন অবস্থায় থাকতে হবে। হাসি বা মুখ ঝুঁকানো এড়ানো ভালো। চশমা, হেডকভার বা মুখ ঢেকে রাখলে ছবি গ্রহণযোগ্য হবে না।
  • ছবি সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্যে তোলা হতে হবে: খুব পুরনো ছবি ব্যবহার করা যাবে না। ছবি বর্তমান চেহারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে যাতে ভিসা অফিস প্রার্থীকে সহজে শনাক্ত করতে পারে।

ইন্ডিয়ান ভিসার প্রসেসিং টাইম

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার প্রসেসিং টাইম সাধারণত ৫ থেকে ৭ কর্মদিবস হয়ে থাকে। তবে বিশেষ সময়ে (যেমন ছুটির মৌসুমে) প্রসেসিং টাইম কিছুটা বাড়তে পারে।

  বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫

যদি কারও ডকুমেন্টস অসম্পূর্ণ থাকে বা কোনো কারণে অতিরিক্ত যাচাইয়ের প্রয়োজন হয়, তাহলে সময় আরও বেশি লাগতে পারে।

বাংলাদেশিদের জন্য ইন্ডিয়ান ভিসার খরচ

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা সাধারণত ফ্রি। তবে আবেদন জমা দেওয়ার সময় ভিসা সেন্টারে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এই সার্ভিস চার্জ প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা হয়ে থাকে।

অতিরিক্ত খরচ হতে পারে যদি কোনো ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে প্রসেস করেন বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি করতে হয়।

ইন্ডিয়ান ভিসার ডকুমেন্ট চেকলিস্ট

ভারতে টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য সব কাগজপত্র সঠিকভাবে সাজানো থাকা জরুরি। সঠিক ডকুমেন্ট থাকলে ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত এবং ঝামেলামুক্ত হয়। নীচে একটি সহজ চেকলিস্ট দেওয়া হলো:

  • বৈধ পাসপোর্ট ও ফটোকপি – কমপক্ষে ৬ মাস বৈধ পাসপোর্ট থাকা উচিত এবং প্রয়োজনীয় পেজের ফটোকপি প্রস্তুত রাখা দরকার।
  • অনলাইন আবেদন ফর্ম প্রিন্ট – ই-ভিসার ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করে প্রিন্ট আউট রাখুন। ভুল তথ্য এড়াতে সাবধানে পূরণ করুন।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি – সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সাম্প্রতিক ছবি লাগবে। মুখ পুরোপুরি দেখা যাবে এমন ছবি ব্যবহার করুন।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র কপি – পরিচয় যাচাইয়ের জন্য NID বা জন্মসনদ কপি সঙ্গে রাখুন।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রয়োজনে) – ভ্রমণ খরচ বহনের প্রমাণ হিসেবে ৩-৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রস্তুত রাখা ভালো।
  • পূর্ববর্তী ভিসার কপি (যদি থাকে) – পূর্বের ভিসা থাকলে পাসপোর্ট বা ভিসার ফটোকপি জমা দিতে হবে।

এই কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

ফ্লাইওয়ে ট্রাভেলের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান ভিসা প্রসেস

অনেকেই অনলাইনে ফর্ম পূরণ বা ডকুমেন্টস প্রস্তুত করতে গিয়ে ভুল করেন, ফলে ভিসা রিজেক্ট হয়ে যায়। তাই নির্ভরযোগ্য ট্রাভেল এজেন্সির সাহায্য নেওয়া সবসময়ই ভালো।

ফ্লাইওয়ে ট্রাভেল (https://flywayint.com/) বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত ভ্রমণ এজেন্সি যারা সহজে এবং ঝামেলামুক্তভাবে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা প্রসেস করে থাকে। আপনি চাইলে আমাদের মাধ্যমে ফর্ম পূরণ, ডকুমেন্টস সাজানো এবং ভিসা সাবমিশন সব কিছু করতে পারবেন।

  ইউরোপের নন সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা 2025

ফ্লাইওয়ে ট্রাভেলের সাথে যোগাযোগ করুন:

ফ্লাইওয়ে ট্রাভেল ক-৯/১ বসুন্ধরা রোড যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে, ঢাকা-১২২৯। ️গুগল ম্যাপ: এখানে দেখুন

ফোন নাম্বার: +8801400001103 (WhatsApp) +8801400001101 +8801400001102 +8801400001104

ওয়েবসাইট: https://flywayint.com/ https://flyway.com.bd/

ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার সময় কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ টিপস মেনে চললে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত এবং ঝামেলামুক্ত হয়। নীচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হলো:

  • আবেদন ফর্মে সব তথ্য সঠিকভাবে দিন – ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিলে ভিসা অনুমোদনে বিলম্ব হতে পারে। সব তথ্য স্পষ্ট এবং সঠিকভাবে পূরণ করুন।
  • পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাস থাকতে হবে – কমপক্ষে ৬ মাস বৈধ পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক, যাতে ভিসা মেয়াদ চলাকালীন আপনার পাসপোর্ট বৈধ থাকে।
  • ছবি অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী জমা দিন – সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সাম্প্রতিক ছবি ব্যবহার করুন। মুখ স্পষ্ট দেখা যাওয়া এবং কোন হেডকভার বা চশমা ছাড়া থাকা উচিত।
  • যদি প্রথমবার ভিসা করেন তবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট রাখুন – ভ্রমণ খরচ বহনের ক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য ৩-৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রস্তুত রাখুন।
  • ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে করলে ঝামেলা কম হয় – অভিজ্ঞ এজেন্সি ব্যবহার করলে ফর্ম পূরণ, ডকুমেন্ট যাচাই এবং প্রক্রিয়ার অন্যান্য ধাপ সহজ হয়।

উপসংহার

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে” – এই প্রশ্নের উত্তর আমরা ধাপে ধাপে তুলে ধরেছি। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, আবেদন প্রক্রিয়া, ছবি ও খরচ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে ভিসা পাওয়া কঠিন কিছু নয়। আর যদি চান ঝামেলাহীন ও নিশ্চিত প্রসেস, তবে অভিজ্ঞ এজেন্সি ফ্লাইওয়ে ট্রাভেল আপনার সেরা সমাধান হতে পারে।